মো: সাদের হোসেন বুলু দোহার থেকে
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার লেখা নদী কবিতায় বলেছেন, ওরে তোরা কি জানিস কেউ জলে কেন উঠে এত ঢেউ, ওরা দিবস রজনি নাচে, তাহা শিখেচে কাহার কাছে, শোন চল্ চল্ ছল্ ছল্ সদায় গাহিয়া চলেছে জল, কবির কৌতহলি মনের উত্তর খুঁজে পেতে আপনিও আসতে পারেন, ঢাকার দোহার উপজেলার মন ভোলানো পদ্মা নদীর তীরবর্তী মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটে ।
এখানে রয়েছে পদ্মা নদীর আছড়ে পরা ঢেউ, সবুজ দিগন্তে পশ্চিম আকাশে নীল আভার সোনালী বর্ণের ছায়া। ভোরের সূর্য উঠার অপরুপ দৃশ্য এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী দেখার অপূর্ব সুযোগ। পাশেই রয়েছে ফসলের মাঠ জোঁরা হলুদ সরিষা ফুলের রাজ্য যা আপনাকে মুগ্ধ করবে। কাছে টেনে নিবে, মনের অজান্তে হয়ত ভালবেসে ফেলবেন প্রকৃতির নিলআভা আর নদী বালু ঝিঁঝিঁ পোকাকে। যান্ত্রিক কোলাহল মুক্ত এই পরিবেশে কিছুটা হলেও আপনি পাবেন মানসিক প্রশান্তি এবং বিনোদন। পদ্মা নদীর প্রাকৃতিক আবহাওয়ায় আপনার মনে কিছুটা হলেও শান্তি ফিরে আসবে।এখানকার আবহাওয়ায় সাচ্ছন্দবোধ করবেন। আবহাওয়া আপনার স্বাস্থ্য ও ভ্রমণের জন্য বেশ উপযোগী।
কোলাহল মুক্ত গ্রাম্য পরিবেশে জেলেদের ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরার অপরুপ দৃশ্য এবং বংশ পরাপর জেলেরা নদীতে কিভাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী ইলিশ মাছ পদ্মা থেকে তুলে আনছে, তা দেখার সুযোগ। সিবোটে পদ্মা নদী ভ্রমনের মাধ্যমে মনে জেগে উঠবে অনাবিল আনন্দের এক তৃপ্ত ছায়া।
এছাড়া দেখাযাবে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সুফি সাধক হযরত শাহলাল শাহ (রঃ) মাযার। যেখানে কয়েক শত বছর ধরে বার্ষিক উরস্ উদযাপিত হয়। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে ভক্ত গন বার্ষিক উরস শরিফে যোগদান করে থাকেন। রয়েছে শাহ পরান ফকিরসহ আরো অনেক অলি লোকদের মাযার শরিফ ইচ্ছে হলে আপনি ঘুরে দেখতে পারবেন।
কিভাবে আসবেন, রাজধানীর ঢাকার গুলিস্থান গোলাপ শাহ(রঃ) মাযার এলাকা থেকে দোহার মৈনটঘাট আসার জন্য রয়েছে অসংখ্য বাস, মাত্র ১০০ টাকা ভাড়ায় ২ ঘন্টায় আপনি পৌছে যাবেন প্রকৃতির অপরুপ নৈসর্গিক পরিবেশ বান্ধব পদ্মা নদীর তীরবর্তী মৈনট ঘাট খ্যাত মিনি কক্সবাজারে। সারাদিন ভ্রমনের পর সন্ধায় আবার আপনি ফিরতে পারবেন বাসে করে আপনার গন্তব্যে।
খাবারে হোটেল, সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মৈনট ঘাটে রয়েছে বেশ কয়েকটি দেশীয় খাবারে হোটেল, পদ্মা থেকে তুলে আনা সদ্য ইলিশ ভাঁজা খেতে কার মনে না।পাবেন নানান জাতের দেশীয় মাছ ও রুচিকর খাবার। রাতে থাকার জন্য এখোনো ভাল হোটেল গড়ে উঠেনি। তাই দিনেই ভ্রমনের কাজটি সমাধান করা ভালো। থাকার ইচ্ছে হলে সিএনজি চালিত অটো-রিকসা অথবা ইজি বাইকে ২০/৩০ ভাড়া দিয়ে নবাবগঞ্জ আসলেই ২শ থেকে ৩শ টাকার বিনিময়ে ভালো হোটেলে রাত কাটানো যাবে।
অনাকাংক্ষিত কোন ঝামেলায় পরার সম্ভাবনা খুবই কম এই অঞ্চলে। শান্তি প্রিয় কৃষিভিত্তিক ও প্রবাসী অধ্যুষিত এই এলাকায় শান্তি প্রিয় মানুষের বসবাস। তারপরও কোন সমস্যায় পরলে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ০১৭১৩৩৭৩৩৩১ এই নাম্বারে মুঠোফোনে পাওয়া যাবে যিনি আপনাকে সার্বিক সহযোগীতা করবেন।