উপেক্ষার জবাব ব্যাটেই দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৭ মাস পর টেস্টে ফেরার ম্যাচে খেললেন ক্যারিয়ার ইনিংস। সঙ্গে তাসকিন আহমেদের স্বপ্নের ব্যাটিং। টেস্ট ক্যারিয়ারে যিনি পেলেন প্রথম ফিফটি। এই দুইয়ের বিরোচিত ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পুঁজি সাড়ে চার শ ছাড়াল।
তিন শ নিয়ে যেখানে টানাটানি ছিল, সেখানে হারারে টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহটা শেষ পর্যন্ত ৪৬৮। নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন যোগ করেন ১৯১ রান। ২৭০ রানে ৮ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ তাই চার শ ছাড়িয়ে হাঁটছিল পাঁচ শর দিকে। শেষ পর্যন্ত এই জুটির পতনে সেটি হয়নি।
তাসকিন ১৩৪ বলে ১১ চারে ৭৫ রান করে ফেরেন। পরে ইবাদত হোসেন (০) ফিরতেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫০ রানে অপরাজিত থেকে যান। যিনি ২৭৮ বলে ১৭ চার ও ১ ছক্কায় সাজিয়েছেন নিজের ইনিংস।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে সফল ব্লেসিং মুজারাবানি। ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আগের দিনের তিন উইকেটের সঙ্গে এদিন ইবাদতের উইকেটটি নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ডোনাল্ড তিরিপানো ও ভিক্তর নিয়াচি।
১টি করে উইকেট নেন রিচার্ড নাগারভা ও মিল্টন শুম্বা। তাসকিনকে ফিরিয়েছেন শুম্বা। বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে যেতেই দেওয়া হয় চা বিরতি। দিনের তৃতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং শুরু করেছে।
এদিন প্রথম দুটি সেশনই বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে ২৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে রান উঠে ১১০। দ্বিতীয় সেশনে দুই উইকেট হারিয়ে অলআউট হলেও এসেছে ৬৪ রান।
আগের দিনের চিত্রটা অবশ্য ছিল পুরোই বিপরীত। ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহর দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়ানো। সপ্তম উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ১৩৮ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সপ্তম উইকেটে যা বাংলাদেশের রেকর্ড। আগের সেরা ছিল ৭৩, ২০১৮ সালে মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজের।
লিটন মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন। ফেরেন ৯৫ রান করে। যা দিনের শেষে আক্ষেপ হয়ে ছিল। আর ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের চাওয়া ছিল নতুন দিনে আরো কিছু রান যোগ করা।
সেখানে মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন জুটি সবাইকে বিস্ময় উপহার দিয়ে ছেড়েছে। প্রায় বিশ্ব রেকর্ডই গড়ে ফেলছিলেন তারা। ৪ রানের জন্য ৯ম উইকেট জুটির বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়া হয়নি দুজনের। ১৯৯৮ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার ও প্যাট সিমকক্স পাকিস্তানের বিপক্ষে গড়েছিলেন ১৯৫ রানের জুটি।
মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন অবশ্য বাংলাদেশের রেকর্ড ঠিকই গড়েছেন। পেছনে পড়ে গেছে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ ও আবুল হাসান জুটির ১৮৪ রান। টস জিতে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত বড় পুঁজিই পেল বাংলাদেশ। এখন বোলারদের প্রমাণের পালা।