শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় নিবিড় পর্যালোচনা শেষে রিভিউর কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নবনিযুক্ত সহকারী জজদের ৩৬তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রথমেই আমরা মানবিক দিকটা বিবেচনা করছি। এটা বিবেচনায় নিয়েই রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দিচ্ছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যুদ্ধ যারা দেখেছেন তাদের কাছে এটা হচ্ছে ১৯৭১ এর পুনরুভ্যুত্থান।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে যা হচ্ছে সেটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এই পর্যায়ে যেতে পারে না। জনগণকে এইভাবে নৃসংশভাবে হত্যা করতে পারে না। তাদের দেশ থেকে বিতারিত করতে পারে না। এই ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথেষ্ট কাজ করছে। বেশ সফলতাও অর্জন করেছে। এটা আপাতত চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যদি মনে করে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারে, যেমন বসনিয়ায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই তারা আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েছিল। রোহিঙ্গারা যদি সেটা আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যায়, সেটাতো আর আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে আইনি কোন বিষয় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের যেভাবে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে, একটা শিশুর বাবা-মাকে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে দেয়া হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে মানবিকতাটাই বড় বিষয়। আইনের কি প্রয়োজন আছে? ১৯৭১ সালে আমাদের যখন ভারত সহায়তা করেছিল সেখানে কোন আইনের প্রয়োজন ছিল কিনা এমন প্রশ্নও করেন আইনমন্ত্রী।

ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের রিভিউ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলকে আমি যখন চিঠি দেব তখনই তিনি মনে করবেন রিভিউ দাখিল করার বিষয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত। সেটাই যদি হয় তাহলে সে ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, রায়টা হচ্ছে ৭৯৯ পাতা। প্রত্যেকটা পাতা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমরা কি কি বাদ দিতে চাই, ঢালাওভাবে তো আর আমরা বাদ দিতে বলতে পারি না। শেষ পর্যন্ত এটা আদালতে সিদ্ধান্ত হবে। এসব বিষয় ভেবেচিন্তে এবং রায়টি অত্যন্ত নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেই রিভিউ করা হবে।

কবে নাগাদ রিভিউ করা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে রিভিউ করা হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। রায়টি নিবিড় পর্যালোচনা শেষেই রিভিউ করার কথা জানান তিনি।

উল্লেখ্য, নতুন নিয়োগ পাওয়া ৪৫ জন সহকারী জজদের দুই মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি মুসা খালিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক।

 মিডিয়াওয়াচ থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ