শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গ্রাম বাংলার বহু পুরানো ঐতিহ্য তালপাতার পাঠশালা আজও গোপালগঞ্জে টিকে আছে। যে পাঠশালাটি মনে করিয়ে দেয় ত্রিশোর্ধ্ব মানুষের শৈশব। একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পাঠশালার এই চিত্র দেখে অনেকেই কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারিয়ে যান সেই দোয়াত কলমের জীবনে। দোয়াতের কালি আর বাঁশের কঞ্চির কলম দিয়ে তাল পাতায় লিখছে কোমলমতি শিশুরা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে পাঠশালার এমন ছবি রূপকথার গল্প মনে হতে পারে। এমন ঘটনা আজ শুধুই অতীত। এ ছবি এখনও স্মৃতিকে নাড়া দিয়ে যাবে অনেককেই। যা বন্ধ হয়ে গেছে আশির দশকে। সকাল থেকেই কোমলমতি শিশুদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে তালপাতার এই পাঠশালা। এখান থেকেই শিশুরা প্রথম অক্ষরজ্ঞান লাভ করে। প্রতিদিন শিশুরা এখান থেকে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, বানান, যুক্তাক্ষর, শতকিয়া, নামতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে দুপুরে বাড়িতে ফিরে যায়। শিশুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলে এই পাঠশালা। গত ৪০ বছর ধরে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বড় ডুমুরিয়া সার্বজনীন হরি মন্দিরে তাল পাতার পাঠশালায় পাঠদান করা হচ্ছে। শুধু টুঙ্গিপাড়ায় নয় দীর্ঘ বছর আগে প্রায় প্রতিটি গ্রামে একাধিক পাঠশালা ছিল। এ পাঠশালায় শিশুদের শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি দেয়া হতো। এখন পাঠশালা আর নেই। তবে গ্রামের মন্দিরে এ পাঠশালাটি এখনও টিকে আছে। সেখানে শিশুরা সকাল ৯ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এ পাঠশালায় প্রায় অর্ধশত শিশু তালপাতায় অক্ষর চর্চা করে। পাশাপাশি তারা গান, কবিতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার চর্চা করছে। এখানকার পাঠ চুকিয়ে তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তালপাতায় অক্ষর চর্চা করলে হাতের লেখা ভালো হয়। এ বিশ্বাস থেকে এলাকাবাসী এখনও তালপাতার পাঠশালাটি টিকিয়ে রেখেছেন। এই মন্দিরের সেবাইত পন্ডিত কাকলী মন্ডল। তাকে গ্রামের লোকজন সামান্য টাকা ও ধান চাল দিয়ে সহযোগিতা করেন। যুগের স্বাক্ষী হয়ে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক তালপাতার পাঠশালাটি- এমনটাই প্রত্যাশা করেন এলাকাবাসী।  

 নির্বাচন ও ইসি থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ