বৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ ২০২৪

রূপগঞ্জে যুবলীগ নেতাকে জবাই করে হত্যা

  সোমবার , ০৯ অক্টোবর ২০১৭

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় মাদক কারবারি আজিজুল হকসহ তার সহযোগীরা মনির হোসেন (২৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যাকান্ডের দুই মাস পর গ্রেফতারকৃত আজিজুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার (০৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার বিরাব খালপাড় এলাকায় মাটিতে পুতে রাখা বস্তাবন্ধি অবস্থায় ওই যুবলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মনির হোসেন ওই এলাকার সেরাজ উদ্দিনের ছেলে। এছাড়া তিনি ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সেলিম মিয়া জানান, গত ৯ আগষ্ট রাতে মনির হোসেন নিখোঁজ হয়। থানার জিডি, মসজিদে মাইকিং ও সম্ভাব্যস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পাওয়ায় অপহরণের পর গুম করে হত্যার আশংকা করে নিখোঁজ মনির হোসেনের পরিবার।  এরপর কোন প্রকার মনির হোসেনের খোঁজখবর না পেয়ে ১২ আগষ্ট তার স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরীটি অপহরণ মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। ওই মামলায় আসামী করা হয়, বিরাব খালপাড় এলাকার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে আজিজুল হক, শান্তিপুর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে সিয়েম, বোরহান উদ্দিনের ছেলে বাদল, লতিফ মিয়ার ছেলে জসীম ও বিরাব এলাকার খালেক মিয়ার ছেলে মামুনকে। গত ৭ অক্টোবর শনিবার রাতে মামলার প্রধান আসামী আজিজুল হককে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়ারচর উপজেলার বড় বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আজিজুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মনির হোসেনের লাশ খালপাড় এলাকার পুকুর পাড়ে পুতে রাখা বস্তাবন্ধি অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। মনির হোসেনকে জবাই করে হত্যা পর বস্তাবন্ধি করে মাটিতে পুতে রেখেছে স্বীকার করেছেন গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক । মনির হোসেনের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে, এমন খবরে এলাকায় কান্নার ঢল নেমে আসে। 
স্বীকারোক্তিতে আজিজুল হক পুলিশকে জানায়, ৯ আগস্ট রাত ১০টার দিকে আজিজুল হকের স্ত্রী তানজিলাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করতে যায় মনির হোসেন। এসময় তানজিলা আত্মচিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ে আজিজুল তার স্ত্রী তানজিলাকে মনির হোসেনের কাছ থেকে উদ্ধার করে। এসময় মনির হোসেনের হাতে থাকা ধারালো ছুড়ি দিয়ে আজিজুলকে আঘাত করার চেষ্টা চালায়। পরে আজিজুল হক হাতে থাকা ধারালো ছুড়ি দিয়ে মনির হোসেনকে জবাই করে হত্যা করে। পরে আজিজুলসহ তার দুই সহযোগী সিয়েম ও জসীমকে নিয়ে মনির হোসেনের লাশ বস্তাবন্ধি করে মাটিতে পুতে রাখে। 
এদিকে, নিহত মনির হোসেনের পরিবারের সদস্যরা জানায়, আজিজুল হকসহ তার সহযোগীরা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করতো। আর এ মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করতো মনির হোসেন। মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় মনির হোসেনকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। 
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানিয়েছে, অভিযুক্ত আজিজুল হকের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে আসছে। আজিজুল হক তার মামার প্রভাব খাটিয়ে এসব অপকর্ম করলেও প্রতিবাদ করার কেউ নেই। কেন্দুয়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেনের পায়ের রগ কেটে দেয় আজিজুল। নিরীহ বিধায় ইসমাইল কোন বিচার পায়নি। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘটনার অভিযোগের শেষ নেই। 
কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। মনির হোসেন যুবলীগের একজন সক্রীয় সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি কোন অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেননা। হত্যাকারীদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়, সে জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তিনি। 
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া হত্যাকান্ডের বিচারটি যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়, সে ব্যপারে পুলিশ প্রশাসন কাজ করবে।

 টিপস থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ