শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকা   রবিবার , ১১ July ২০২১

দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান আর্জেন্টিনার। ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসিরা। ঐতিহাসিক মারাকানায় রবিবার বাংলাদেশ সময়  সকালে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ১-০ গোলে জয় তুলে নেয় আর্জেন্টিনা। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার ২২ মিনিটে করা একমাত্র গোলেই নির্ধারণ হয় ম্যাচের ভাগ্য।

নেইমারকে কাঁদিয়ে দেশের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম কোনো শিরোপার স্বাদ পেলেন মেসি। আর আর্জেন্টিনা পেলো ১৯৯৩ সালের পর প্রথম কোনো মেজর টুর্নামেন্টের শিরোপা।

প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়া ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়ে খেলেও গোল পায়নি। বারবার সেট পিস আদায় করে নিয়ে চাপে রেখেছে প্রতিপক্ষকে। কিন্তু আসল কাজ গোলটাই আসেনি। অবশ্য অফসাইডে তাদের একটি গোল বাতিল হয়ে যায়।

সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে তিন-তিনটি শট রুখে আর্জেন্টিনার নায়ক ছিলেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। যিনি এ ম্যাচেও দারুণ কিছু সেভ করেছেন। এদিন ডি মারিয়াকে প্রথম একাদশে রাখেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। এমন আস্থার প্রতিদানও দেন আগের ম্যাচগুলোতে বদলি হিসেবে খেলা পিএসজি তারকা।

ডি মারিয়া গোলটি করেছেন ব্রাজিল রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে। মাঝ মাঠ থেকে সতীর্থ ডি পলের পাস ধরে ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসনের মাথার উপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন তিনি। এর আগে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ব্রাজিলের রেনান লোদি। অথচ অনেকটা পায়ে বল পেয়েছিলেন তিনি।

২০০৪ সালে সিজার দেলগাদোর পর ডি মারিয়া প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার, যিনি কোপার ফাইনালে গোল করলেন। বলের দখল ও আক্রমণ তুলনায় প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল ব্রাজিলই। পুরো ম্যাচেও তাই। ৬০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে খেলেছে দলটি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণে ধার বাড়ে তিতের দলের। ৫২ মিনিটে আর্জেন্টিনার জালে বলও জড়িয়ে দেন রিচার্লিসন। তবে অফসাইডের পতাকা তোলেন সহকারী রেফারি। সতীর্থ লুকাস পাকুয়েতা যখন রিচার্লিসনের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান, তখন পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন রিচার্লিসন।

দুই মিনিট পরই ফের বিপদজনকভাবে আর্জেন্টিনার ডি বক্সে ঢুকে পড়েন রিচার্লিসন। এ দফায় তার শট রুখে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্টিনেজ। তবে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্যও করতে দেয়নি আর্জেন্টিনা। তারাও বেশ কিছু ভালো আক্রমণ তৈরি করে এরপর, যদিও কোনোটাই সফল হয়নি।

মেসিকে ব্রাজিল আর নেইমারকে আর্জন্টিনা বোতলবন্দী রাখার পরিকল্পনাতেই মাঠে নামে। সেটাতে তারা শতভাগ সফল না হলেও চেষ্টার কমতি করেনি কেউই। দুই তারকাই কড়া ট্যাকেলের শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকবার। এরপরও ম্যাচে নিজেদের প্রভাব রাখার চেষ্টা করে গেছেন তারা দারুণভাবে।

ম্যাচের বয়স যত বেড়েছে, মাঠে উত্তেজনাও বেড়েছে তত। দুই দলের খেলোয়াড়রাই ফাউলে জড়িয়েছেন। পুরো ম্যাচে ৯ বার হলুদ কার্ড বের করতে হয়েছে রেফারিকে। এখানে ৫-৪ এ এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ফাউল অবশ্য বেশি ব্রাজিলের। ২২ বার ফাউল করেছে দলটির খেলোয়াড়রা, আর্জেন্টিনা ১৯বার।

চাপ প্রয়োগ করে খেলতে থাকা ব্রাজিল বেশ কিছু সেট পিস আদায় করে নেয় শেষ দিকে। যা থেকে স্বাভাবিকভাবেই চাপে ছিল আর্জেন্টিনা। ৮৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নেইমারের নেওয়া শটে গ্যাব্রিয়েল বারবোসা পোস্টে বল মারলে দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্টিনেজ।

দুই মিনিট পর গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন লিওনেল মেসি। তাতে অবশ্য দেশের হয়ে প্রথম শিরোপায় চুমু আঁকতে সমস্যা হয়নি তার। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই সতীর্থরা তাকে নিয়ে উল্লাসে মাতে। অন্যদিকে চোখের জলে মাঠ ছেড়ে যান নেইমার।

 ক্রীড়াঙ্গন থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ