মেহেরপুর প্রতিনিধি :মজুরি খরচ, সার, কীটনাশকের বাড়তি দামেই কৃষকের নাভিশ্বাস। এর মধ্যেই আবার আমনে কারেন্ট পোকার হানা। পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় কৃষকরা আমন নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে। এই পোকার আক্রমণে ধানের গাছপুরো শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে এতে প্রচুর পরিমাণে চিটা পড়ছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠের একই দৃশ্য। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। যদি এ পোকা দমন না করা যায় তাহলে চরম ফলন বিপর্যয় ঘটবে আমনে। আর এতে চিন্তার ভাঁজ কপালে পড়েছে চাষির।করমদী গ্রামের আমন চাষি স্বপন আহমেদ বলেন, ধানের দানা যখন শক্ত হবে সেই সময় হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। এসময় পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় হতাশ আমরা। কীটনাশক প্রয়োগ করেও তেমন কাজ হয়নি। ধানের গাছ পুরো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।তাই ধান পাকার আগেই ধান কেটে ফেলতে হলো। এতে ফলন একেবারেই কমে যাবে।অলিনগর- বামন্দী মাঠের আমন চাষী মো. সুজাউদ্দিন বলেন, আমার দুই বিঘা আমন ধান রয়েছে। কারেন্ট পোকা নামক এক ধরনের পোকায় ধান সব কেটে দিচ্ছে। ধান নিয়ে খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। চাষীদের আবাদ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আবাদ করতে গিয়ে ব্যাপক খরচ হচ্ছে। সারের দাম, মজুরি খরচ, কীটনাশকের দাম, সেচ দেওয়া, লাগানোসহ সব খরচ হিসাব করলে ধানে আর মূল টাকা উঠছে না।দেবীপুর- তেরাইল মাঠের আমন ধান চাষি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এমন সময় আমনে কারেন্ট পোকা লেগেছে যখন ধানের দানা পরিপক্কতা লাভ করবে। এই পোকা আমার ধান পুরা নষ্ট করে দিয়েছে। জমির ধান মাঝে মাঝে কেটে ফেলেছি আর অনেক ধান কাচা রয়েছে। কারেন্ট পোকাই আক্রমণ করার কারণে সেগুলো পেকে গিয়েছে কিন্তু দানা খুব কম। চরম ফলন বিপর্যয় ঘটছে। বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ১০ মন হারে হতে পারে।তিনি আরও বলেন, সব ধরনের কীটনাশক স্প্রে করেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আবাদ করা বড়ো-ই কঠিন হয়ে পড়েছে।কারণ সার,কীটনাশক সহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান রোপণ করা রয়েছে ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে।আমনে পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।কারেন্ট পোকা কিভাবে দমন করা যায় সে বিষয়ে চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পোকার আক্রমণ বেশি দেখা দিয়েছে।আর সেচ দিতে গিয়েও গুনতে হচ্ছে চাষীদের বাড়তি খরচ।