প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবেলের আরাধনা, প্রাচীন রোমানে দেবীজুনোর আরাধনা ও ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে মাদারিং সানডের মতো বেশ ক’টি আচার-অনুষ্ঠানেরমাধ্যমেই সর্বপ্রথম মা দিবসের ধারণা সামনে আসে। মায়েদের সম্মানে মাদারিং সানডে পালিতহতো নির্দিষ্ট একটি রবিবারে। যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের প্রচলন শুরু হয় আমেরিকানসমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্ড হোই নামের এক নারীর হাত ধরে। ১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন।এটি মাদার’স ডে প্রোক্লেমেশন নামে পরিচিত ছিল। এ ঘোষণার মধ্যে জুলিয়া রাজনৈতিক স্তরেসমাজ প্রতিষ্ঠায় নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য রাখেন। এরপর যুদ্ধশেষে পরিবারহীন অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী অ্যান মারিয়ারিভস জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস। এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবসপালন করতে শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের৫ মে মারা যান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। ১৯০৮ সালেপশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা তার মায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান করেন। একই বছর মার্কিনকংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে। তবে হার মানেননিআনা। তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মাদিবস পালিত হতে থাকে। অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীনপ্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকেসরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও মে মাসেরদ্বিতীয় রবিবার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই বাণ্যিজ্যিকপ্রভাবে কমতে থাকে দিনটির মূল আবেদন। যুক্তরাষ্ট্রে দিনটি এতটাই বাণিজ্যিক হয়ে ওঠেযে আনা মেরি জার্ভিস প্রতিবাদী হয়ে পড়েন। দিনটির এমন অবমাননার প্রতিবাদে তিনি নিজেরসমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করেন ও ঘোর বিরোধিতার অভিযোগে গ্রেফতার হন। মূলত আনা মেরি জার্ভিসকেইমা দিবসের আসল প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গণ্য করা হয়।