বুধবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা : ড. ইউনূস

দেশকাল ডেস্ক   সোমবার , ০৫ আগষ্ট ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীরপদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এমতবস্থায় দেশে অন্তর্বর্তীকালীনসরকার গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বর্তমান পরিস্থিতিতেছাত্রজনতার এ বিজয়কে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদড. মুহাম্মদ ইউনূস।

 

সোমবার (৫ আগস্ট)দ্য প্রিন্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

 

ড. ইউনূস বলেন,আমরা অধীকৃত দেশের মতো ছিলাম। তাদের মনোভাব ছিল একনায়কতন্ত্রের মতো। তারা সবকিছুইনিয়ন্ত্রণ করত। এখন বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীন। এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। এখনআনন্দে মেতে উঠেছে সারা বাংলাদেশের জনগণ। সব জায়গায় আনন্দ মিছিল হচ্ছে। আন্দোলনরত সবাইকেআমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।

 

তিনি বলেন,এখন আমরা আনন্দ অনুভব করছি। আমাদের এখানে অনেক সমস্যা আছে। আমরা এখন নতুন করে শুরুকরতে চাই। আমাদের জন্য সুন্দর একটি দেশ তৈরি করতে চাই। এটা আমাদের অঙ্গীকার। ছাত্র-জনতাইআমাদের ভবিষ্যত। আমরা তাদের নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

 

এক প্রশ্নেরজবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন, আমরা মুক্ত। এখন আমরা সিদ্ধান্তনিতে পারব আসলে আমরা কী করতে চাই। আশা করছি আমরা খুব ভালোভাবে শুরু করতে পারব।

 

বাংলাদেশেরএমন পরিস্থিতিতে আপনার অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমি জনগণেরজন্য কাজ করে যাবো, আমি যেটা করতাম। আমি এখন স্বাধীনভাবে আমার কাজ করে যেতে পারব। আপনারাজানেন যখন শেখ হাসিনা সরকারে ছিল তিনি আমাকে পারসোনালি আক্রমণ করেছেন। এখন সেটার অবসানহয়েছে। খুব দ্রুত দেশে ফিরবেন বলে জানান তিনি।

 

এদিকে এক ভিডিওবার্তায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান বলেছেন, গৌরবজনক ঐতিহাসিক এ মুহূর্তে বাংলাদেশেরসাহসী ছাত্রজনতাকে বীরোচিত অভিনন্দন। হাজারও শহীদের প্রাণের বিনিময়ে জনতার ঐতিহাসিকবিপ্লবের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে প্রিয় বাংলাদেশ। জনতারবিপ্লবের প্রথম ধাপ চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছে। লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকখনো পরাজয় মানতে পারে না। এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, দল-মত-নির্বিশেষেঐক্যবদ্ধ থাকলে এ বাংলাদেশকে কেউ কখনো পরাজিত করতে পারবে না।

 

তিনি বলেন,বিজয়ের এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমি আজ সেইসব মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, এই গণবিপ্লবেযারা তাদের প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। এভাবে গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকালে অনেক সন্তানতার প্রিয়তম পিতা হারিয়েছেন, অনেক স্ত্রী প্রিয়তম স্বামী হারিয়েছেন গুম খুন অপহরণ করেঅসংখ্য মায়ের বুক খালি করে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের সন্তানের শহীদি মৃত্যু স্বজনদের ত্যাগতিতিক্ষায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আরেকটি বিজয় দেখেছে বাংলাদেশ।

 

তারেক রহমানবলেন, জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব সফল করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্রজনতা আহত হয়েছেন। বাসায়, হাসপাতালেকিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন যন্ত্রণাবিদ্ধ সময়ে সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে আপনাদের পাশে আজসারা বাংলাদেশ। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা ও রাজনৈতিকউদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। অবিলম্বেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের কারামুক্তির দাবি জানাচ্ছি।একইসঙ্গে, ছাত্রছাত্রীরা যাতে আবার স্বাভাবিকভাবে হলে, হোস্টেলে, ক্লাসে ফিরতে পারেএবং পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, আশা করি সরকার সবার আগে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

 

তিনি আরও বলেন,প্রিয় দেশবাসী, এবার আপনাদের কাছে আমি একটি বিনীত আহ্বান রাখতে চাই। বিজয়ীর কাছে পরাজিতরানিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয়। সুতরাং, বিজয়ের এই আনন্দঘন সময় রাহুমুক্তিরএই ঐতিহাসিক মুহূর্ত শান্তভাবে উদযাপন করুন। অনুগ্রহ করে কেউ প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণহবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। অর্জিত বিজয় যাতে লক্ষচ্যুত না হয় সে ব্যাপারেসতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান। ’৫২, ’৭১ কিংবা ’৯০-এর মতোছাত্রজনতা আবারও একটি বিজয়ের ইতিহাস রচনা করেছে। প্রিয় দেশবাসীকে আবারও বীরোচিত অভিনন্দন।

 মিডিয়াওয়াচ থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ