শনিবার , ০৫ অক্টোবর ২০২৪

পলকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

দেশকাল ডেস্ক   বৃহস্পতিবার , ২২ আগষ্ট ২০২৪

ডিজিটালমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে সাবেক ডাক,টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালেমামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকএ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে মো. সোহাগ মল্লিক মামলার আবেদন করেন।

 

সাইবারনিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৫ ও ২৭ ধারায় মামলাটি করা হয়। মামলা এজাহারে বলা হয়, আসামিএকজন আইনমান্যকারী বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক। তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী।সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাধিকবারদেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউন হয়। এতে জনজীবন বিপর্যস্তহয় এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

 

দেশেগত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও গত ১৮ জুলাই রাত নয়টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটবন্ধ হয়ে যায়। এতে টানা পাঁচ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধছিল ১০ দিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইত্যাদি ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমের সেবা বন্ধ ছিল ১৩ দিন।

 

 

সারাদেশেইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার বিষয়ে গত ১৮ জুলাই পলক বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানান যে, পরিস্থিতিরপ্রয়োজনীয়তায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। ২৪ জুলাই বিভিন্ন গণমাধ্যমকে তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডেডাটা সেন্টার ও ইন্টারনেট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ২৭ জুলাইবিভিন্ন গণমাধ্যমে পুনরায় জানান যে, সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করেনি, ইন্টারনেট বন্ধ হয়েগেছে।

 

গত২ আগস্ট বাদি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতাএবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার দায়ভার নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। ৫ জুলাই পলকের নির্দেশঅনুযায়ী সারা দেশে পুনরায় কিছু সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

 

১৩জুলাই দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ এবং সংশ্লিষ্টতারবিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামেরনির্দেশে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

 

গঠিতকমিটি যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করে তা অনুযায়ী, ‘গত ১৫-১৬ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেটএবং গত ১৮-২৩ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টিডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগনিয়ন্ত্রণ কমিশন’ (বিটিআরসি) এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায়সম্পন্ন করা হয়।

 

অপরদিকেগত ১৭-২৮ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার’ (এনটিএমসি) এর নির্দেশনায়সম্পন্ন করা হয়।

 

উল্লেখ্যপ্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, এই সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেটবন্ধের কোন সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্থহওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকজাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন।

 

তিনিপ্রতিমন্ত্রী হয়েও বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট বন্ধসংক্রান্ত মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালায় যায় ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিও সুনাম ক্ষুন্ন হয়। আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করার জন্য তাদেরইন্টারনেট নেটওয়ার্কে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। যার ফলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিপন্ন হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে জনসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও সেবা ক্ষতিগ্রস্থবা ধ্বংসসাধন করেন।

 

গত১৭-২৮ জুলাই পর্যন্ত এবং সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট সকাল আনুমানিক ৯টা থেকে দুপুর আনুমানিক১টা পর্যন্ত আসামি বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যও অপপ্রচার করে জনমনে ভয়ভীতি সঞ্চার করে বৈধ ইন্টারনেট প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে দেশেরমানুষের সঙ্গে মিথ্যাচার করে এবং দেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন করায় এই মামলা দায়েরকরা হয়েছে।

 

মামলায়আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং জেল হাজতে আটক রেখে সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণেরদাবি করা হয়।

 তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আরোও সংবাদ

ই-দেশকাল

আর্কাইভ