এখনও দেশের ১১টিজেলায় বন্যায় পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে ১০ লাখের বেশি পরিবার। বন্যায় মৃতের সংখ্যাবেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়েরসর্বশেষ হালনাগাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়,বন্যা আক্রান্ত ১১টি জেলা হলো– ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এর মধ্যে সিলেট, হবিগঞ্জও চট্টগ্রাম জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখনও ৬৪টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত,আর ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ও পৌরসভা ৪৮৬টি। এসব এলাকায় মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবারপানিবন্দি। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ জন।
বন্যায় এখন পর্যন্তযে ৫৪ জনের তথ্য পেয়েছে সরকার তার মধ্যে পুরুষ ৪১ জন, নারী ৬ জন এবং শিশুর সংখ্যা ৭।কুমিল্লায় মারা গেছেন ১৪ জন, ফেনীতে ১৯, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৮,ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও কক্সবাজারে ৩ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন। মৌলভীবাজারেনিখোঁজ আছেন ১ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানোহয়, পানিবন্দি লোকদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ৩ হাজার ২৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮৭ জন লোক এবং ৩৮ হাজার ১৯২টি গবাদিপশুকে আশ্রয়দেওয়া হয়েছে।
১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদেরচিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৫৬৭টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে। সেনাবাহিনী ও জেলার সিভিল সার্জনকার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেখানে সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টজেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিয়েছেন।
এছাড়া দেশের সবজেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সবপর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সংগৃহীতমোট ১ লাখ ১৫ হাজার ১০৫ প্যাকেট শুকনো খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের(ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীরমাধ্যমে বন্যাদুর্গত এলাকায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮৫ প্যাকেট ত্রাণ, ১৯ হাজার ২৬০ প্যাকেটরান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মোট ৪২ হাজার ৭৬৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৮হাজার ৩৮৯ জনকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ১৫৩ জনকে উদ্ধারকরে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত মোট ২৪টি ক্যাম্প এবং১৮টি মেডিক্যাল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে।
সার্বিকভাবে দেশেরবন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরছেন। বন্যাদুর্গতজেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।
বন্যা পরবর্তীপানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলাহয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে।তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
বন্যা আক্রান্তজেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী,নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিক্যাল টিমও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।