৫ম দিনে বাংলাদেশেরইতিহাস গড়তে দরকার ছিল ১৪৩ রান। আগের দিনের ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে এদিন আরও ১৪ রানকরেছিলেন দুই ওপেনার। ১০ ওভারে পার করেন দলীয় ৫০ এর মার্ক। এরপরেই অবশ্য বিপত্তি। মীরহামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননিআরেক ওপেনার সাদমান। মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শান মাসুদের হাতে। খুররামতুলে নেন ইনিংসে নিজের প্রথম উইকেট।
দুই উইকেট পতনেরপর অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল খেললেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণেশুরুতে খানিকটা সংগ্রাম করতে হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটাও ততক্ষণেপাকিস্তানের নাগালের অনেকটা বাইরে চলে যায়।
মধ্যাহ্নভোজেরপর অবশ্য শান্ত বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশঅধিনায়ক। করেছেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫৮ রান।
শান্তর পর মুমিনুলওফিরে যান। এরপর অবশ্য আর কোনো বিপত্তি ঘটেনি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব ও মুশফিক মিলেবাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন জয়ের বন্দরে। এ জুটি এদিন যেন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করেইনেমেছিলেন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ পেল ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। এর আগে ২০০৯ সালেওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবারতাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম।
গতকালের দিনটাইমূলত ভিত গড়ে দেয় জয়ের। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে হাসান মাহমুদ তুলে নিয়েছিলেন ২ উইকেট।২১ রানের লিড থাকলেও ব্যাকফুটেই ছিল পাকিস্তান। ৪র্থ দিন বাংলাদেশের পেসাররা ঝরালেনআগুন। নাহিদ রানার গতির সামনে অসহায় পাকিস্তানের টপ আর মিডল অর্ডার। ক্যারিয়ার সেরাবোলিং স্পেল উপহার দিলেন।
সঙ্গ দেন হাসানমাহমুদ নিজেও। দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সালমান আঘাকে ফিরিয়েছেন।১৭২ রানে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৮৫ রান।
এর আগে লিটন কুমারদাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে গড়া ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ড জুটিটাও টাইগারদেরআত্মবিশ্বাসের পালে দিয়েছে বাড়তি হাওয়া। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোরপর ৭ম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই টাইগার ব্যাটার। লিটন পেয়েছিলেনক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। প্রথম ইনিংসের পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল২৬২ পর্যন্ত।
১২ রানে পিছিয়েথাকলেও বাংলাদেশের ম্যাচে ফিরতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকাউড়েছিল সিরিজের শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত সিরিজ শেষে উঁচুতেই থাকলো লাল-সবুজের সেই পতাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান ইনিংস:২৭৪/১৭২
বাংলাদেশ ইনিংস:২৬২/ ১৮৫
ফল: বাংলাদেশ৬ উইকেটে জয়ী। সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ:লিটন কুমার দাস।
ম্যান অব দা সিরিজ:মেহেদী হাসান মিরাজ।